মেঘের দিন সাদাত হোসাইন pdf || meger din sadat hossain pdf

Rate this post

মেঘের দিন-সাদাত হোসাইন pdf || meger din sadat hossain pdf download. মেঘের দিন সাদাত হোসাইন pdf

Book Name: Megheder Din by Sadat Hossain – PDF Download
বাংলা উপন্যাস : মেঘেদের দিন – সাদাত হোসাইন – পড়ুন 
Book Category : Bangla Novel
Book Writer: Sadat Hossain 
Book Format: Portable Document Format – PDF File
Book Language: Bengali
Book info:  52 Pages 

Size: 17 MB

মেঘেদের দিন প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল অন্যদিন ঈদ সংখ্যা ২০১৮ – তে । একসময় পত্রপত্রিকার ঈদ সংখ্যাগুলাের একটা রমরমা ব্যাপার ছিল । সবাই রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকার ঈদ সংখ্যার অপেক্ষায় থাকত , যেন ঈদ সংখ্যা না হলে ঈদের আনন্দই পরিপূর্ণ হয় না । সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে । এখন ঈদ কেবল টিভিতে দেখা যায় । সেখানে ঈদের দশম দিন বলেও একটা ব্যাপার থাকে । হরেক রকম প্রােগ্রাম হয় । সেসব প্রােগ্রাম নিশ্চয়ই মানুষ আগ্রহ নিয়ে দেখে । না হলে এত এত প্রােগ্রাম হওয়ার কথা । ঠিক সে কারণেই কি না কে জানে , পত্রপত্রিকার ঈদ সংখ্যার প্রতি মানুষের আগ্রহ আর আগের মতাে নেই । ফলে ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হলেও এই উপন্যাসটি বেশির ভাগ পাঠকেরই পড়া হয় নি বলেই আমার মনে হয়েছে । অবশেষে উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশিত হলাে । তবে পত্রিকায় প্রকাশিত উপন্যাসটির থেকে এটি কিছুটা পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত । ‘ মেঘেদের দিন ‘ মূলত এক ভয়াল রাত্রি কিংবা আমাদের চারপাশের এক অন্ধকার সময়ের গল্প । সেই রাত্রি কিংবা অন্ধকার সময় কেটে গেলেও যে ঝলমলে সূর্যের দিন আসে , তেমন নয় । বরং সেখানে অপেক্ষায় থাকে থমথমে মেঘেদের দিন । কিন্তু তাতে ভয়ের কিছু নেই । কারণ কবিগুরু তাে বলেই গেছেন , ‘ মেঘ দেখে তােরা করিসনে ভয় , আড়ালে তার সূর্য হাসে … ‘ । ‘ মেঘেদের দিন ‘ – এর আড়ালেও সূর্য হাসে ।

মেঘের দিন উপন্যাসের একাংশঃ বলার ভঙ্গিটা এমন ছিল যে মারুফের মন খারাপ হয়ে গেল । যদিও সে মন খারাপটাকে পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করল । নানাভাবে নিজেকে বােঝানাের চেষ্টা করল যে , বড় মামা এলেই সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে । আবার তারা সেই আগের ছােটবেলার মামাবাড়িটাকে ফিরে পাবে । সবকিছু ঠিকঠাক মনে হবে । এত বছর পর সেই ছােট্ট মারুফ তার বউ নিয়ে এসেছে , চারধারে একটা তুমুল হইহট্টগােল না হয়ে যায়ই না ! মারুফ মনে মনে একভাবে প্রার্থনাও করতে থাকল । না হলে তানিয়ার কাছে তার মানসম্মান বলে আর কিছু থাকবে না । খানিক রাত বাড়তে বড়মামা আলাল খাঁ বাড়িতে এলেন । খুব গম্ভীর মুখে তিনি মারুফ আর তানিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা বললেন , “ তােমার মায়ের খবর কী ? ‘ ‘ জি ভালাে । ‘ ‘ শ্বশুরবাড়ির সবাই আছে কেমন ? ‘ এই তাে মামা , ভালােই । মারুফ তার সেই ছােটবেলার আলাল মামাকে এই বড়বেলায় দেখে যথেষ্টই হতাশ হয়েছে । তাঁর মাথা প্রায় ন্যাড়া । চোখে সুরমা । পরনে লম্বা সাদা আলখাল্লার মতাে পােশাক । তবে মুখে দাড়ি নেই । হারিকেনের আবছা আলােয় মারুফ বুঝতে পারল না তার কি দাড়িই ওঠে না , নাকি তিনি ইচ্ছে করেই দাড়ি রাখেন নি । আলাল খা কথা বলছেন ধীর , স্থির , শান্ত কণ্ঠে ।

অথচ ছােটবেলায় এই মানুষটিই কী দুরন্ত , ছটফটে ছিলেন । তাঁকে দেখে অবশ্য বােঝার কোনাে উপায়ই নেই যে , তিনিই সেই ছােটবেলার আলাল মামা । দেখতে বয়সের চেয়ে বেশি বয়স্ক মানুষ মনে হচ্ছে তাঁকে । ‘ তােমার মায়ের শরীর – স্বাস্থ্য সব ভালাে ? মারুফ বলল , ‘ জি মামা , মা মােটামুটি ভালােই আছেন । “ আর কী খবর ? ‘ এই তাে । বাবার মৃত্যুর পর মা একটু বেশিই ভেঙে পড়েছিলেন । ‘ ঢাকায় তােমাগাে একটা জমি নিয়া হুনছিলাম ঝামেলা চলতেছে , সেইটার খবর কী ? ‘ বাবা পার্টনারশিপে জমিটা কিনেছিলেন , কিন্তু ওটার পুরাে টাকা শােধ করতে পারেন নি । ফলে বাবার অন্য পার্টনারদের কাছ থেকে আমরা জমিটাও বুঝে পাই নি । ‘ হুম । জমিজমা দখলে রাখা সহজ ব্যাপার না । ‘ জি মামা । তারপর আছে সােহান । সােহানের অবস্থা তাে জানেনই ! ‘ হুম । তা কী অবস্থা ? সে কি আর ভালাে হইবাে না ? ডাক্তার – কবিরাজ দেখাও না ? তারা কী বলে ? ‘ অনেক দেখিয়েছে । কিন্তু ওর সমস্যাটা জন্মগত । ফলে তেমন একটা আশা নেই । তারপরও আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা তাে করেছি । এখনাে করছি । ‘ হুম । আল্লাহর মাইর আলমের বাইর । আল্লাহর উপরে কোনাে হাত নাই কারও । ‘ জি মামা । তবে এইসব নিয়ে মা খুব দুশ্চিন্তা করেন । তা ছাড়া মা’র বয়সও তাে কম হয় নি ! আলাল খা আর বেশি কথা বাড়ালেন না । তিনি কী – এক সালিশ করতে রাতেই আবার বেরিয়ে গেলেন । শেষপর্যন্ত মারুফদের থাকার ব্যবস্থা হলাে দুলাল খাঁর ঘরেই । কিন্তু সারা রাত কেন যেন একটুও স্বস্তি বােধ করল না মারুফ । যদিও বিষয়টা তানিয়ার কাছে ধরা দিতে চাইল না সে ।

তানিয়া অবশ্য নিজ থেকেই তাকে ডাকল , ‘ আমার না একটুও ভালাে লাগছে না মারুফ । কী ভালাে লাগছে না ? ‘ তােমার মামাদের । কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ইতস্তত গলায় বলল তানিয়া , এই বাড়ির সবাই – ই একটু কেমন যেন ! অদ্ভুত ! ‘ অদ্ভুত কেন হবে ? গ্রামের মানুষ এমনই হয় । তুমি তাে এর আগে কখনাে গ্রামে আসসা নি , এইজন্য জানাে না ! ‘ মারুফ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করল । ‘ কিন্তু আমি তাে শুনেছি গ্রামের মানুষ হয় হাসিখুশি , সহজ – সরল ধরনের । মারুফ এবার যেন খানিকটা রূঢ় হলাে , ‘ ওগুলাে বইপত্রের কথা । বইপত্র যারা লেখে , তাদের বেশির ভাগই থাকে কল্পনার জগতে । এইজন্য এরা বাস্তব জগতের ঘটনা টের পায় না । ‘ তুমি এভাবে কথা বলছ কেন ? ‘ কীভাবে কথা বলছি ? জানি না ! তানিয়া পাশ ফিরে শুলাে । মারুফ অন্ধকারে কিছুক্ষণ চুপচাপ শুয়ে রইল । বাইরে একটানা ঝিঝি পােকার ডাক । তবে পাকা দালানের কারণে বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে কি না বােঝা যাচ্ছে না । অথচ এই মারুফ গুটিসুটি মেরে উঠানের এপাশের টিনের ঘরের দোতলার কাঠের পাটাতনের ওপর শুয়ে থাকত । সেখানে দাঁড়ালে মাথার ঠিক সামান্য ওপরেই টিনের চাল । রাতে বৃষ্টি হলে তার শব্দে জগৎসংসার যেন একাকার হয়ে যেত । বৃষ্টি না হলেও টিনের চালের ওপরে ঝুঁকে থাকা গাছের পাতায় জমা বৃষ্টি বা শিশিরের ফোঁটা টুপটাপ অবিরাম ঝরে পড়ত । সেই শব্দ বুকের ভেতর কেমন অচেনা – অজানা কিন্তু তীব্র সকরুণ এক সুর বইয়ে দিত । সেই একই বাড়ি , তেমনই বৃষ্টির রাত , অথচ মাঝখানে কেবল বয়ে গেছে । সুদীর্ঘ সময় । সেই সময় কোথায় যেন বয়ে নিয়ে গেছে সেই মানুষ , সেই অনুভব , সেই স্পর্শগুলাে । তারা আর কখনােই ফিরবে না ।

এ যেন চূড়ান্ত মৃত্যুর আগেই আরও অসংখ্যবার মৃত্যু । আরও অসংখ্যবার অনন্ত যাত্রা ! মারুফের ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল । সেই আলাল আর দুলাল মামার ছবি এখনাে তার কাছে এত জীবন্ত , এত সজীব , যেন হাত বাড়ালেই সে ছুঁয়ে দিতে পারবে । অথচ সেই মানুষগুলােই চিরতরে কেমন অচেনা হয়ে গেল । হারিয়ে গেল মৃত্যুর মতােই । তারা আর কখনােই ফিরে আসবে না ! সে তানিয়ার কাঁধে হাত রাখল , ঘুমিয়ে পড়েছ ? তানিয়া কথা বলল না । মারুফ বলল , “ আমি সরি । ‘ সরি কেন ? ‘ এই যে তোমার সাথে এমন করে কথা বললাম ! “ তােমার খুব মন খারাপ হয়েছে , তাই না ? নিজের অভিমান ভেঙে তানিয়া খানিক ঘনিষ্ঠ হয়ে এল । তার গলায় খানিক মায়া । মারুফ বলল , হু , হয়েছে । ‘ উনারা এমন করলেন কেন আমাদের সাথে ? “ কী জানি ! হয়তাে এতদিন কোনাে যােগাযােগ রাখি নি বলে অভিমান করেছেন । তানিয়া এই কথার উত্তর দিল না । কিন্তু এই গভীর রাতে দূরে কোথাও হঠাৎ কুকুর ডেকে উঠল । সেই ডাকে বুকের ভেতরটা কেমন ভয়ে হিম হয়ে এল তানিয়ার । সে জড়সড় হয়ে মারুফের বুকের ভেতর যেতে চাইল । মারুফ তাকে দুহাতে বুকের সাথে জাপ্টে ধরল ।

মেঘের দিন-সাদাত হোসাইন pdf- Download

রকমারি থেকে বইটি ক্রয় করুন- Buy

বইটির পিডিএফ যেভাবে ডাউনলোড করবেন- দেখুন